বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম
(এই) সেই
(মহা) গ্রন্থ (আল কোরআন) তাতে
(কোনো) সন্দেহ নেই, যারা
(আল্লাহ তায়ালাকে) ভয় করে (এই
কিতাব কেবল) তাদের জন্যই
পথপ্রদর্শক; সুরা বাক্কারা, আয়াত-২
যে ঘোষণা আল্লাহ তায়ালা
দিয়েছেন বিশ্বাস করা প্রত্যেক মুসলিমের
জন্য ফরয, যে ব্যক্তি
আল্লাহ-কে অবিশ্বাস করে
সে কাফের, কোরআন-কে
যে অবিশ্বাস করে সে কাফের,
কোরআনের একটি আয়াতকে যে
অবিশ্বাস করে সে কাফের
আবার সহীহ হাদীস যে
ব্যক্তি অবিশ্বাস করে সেও কাফের।
মুমিন যারা তারা আল্লাহ
তায়ালাকে ভয় করে তাদের
জন্য কোরআন পথপ্রদর্শক।
এই পথপ্রদর্শক (কোরআনের) ভিতরে আল্লাহ তায়ালা
সম্বন্ধে বহু আয়াত আছে। এই
আয়াত গুলো যে ভাবে
আছে ঠিক সেই ভাবে
মুসলিমদেরকে বিশ্বাস করতে হবে, সহীহ
হাদীসে যেভাবে আছে সেভাবে
বিশ্বাস করতে হবে এর
বাইরে কেউ অন্য কিছু
বিশ্বাস করলে তা কবুল
হবে না এবং তা
উম্মতে মুহাম্মদীর জন্য যায়েজওনা।
ঈমান-ই
মুজমাল
উচ্চারণঃ আ-মানতু বিল্লা-হি কামা-হুয়া
বিআসমা-ইহী
ওয়া সিফা-তিহী ওয়া
ক্বাবিলতু জামী-আ আহকা-মিহী ওয়া আরকা-নিহী।
অর্থঃ আমি আল্লাহ তা’আলার উপর ঈমান
আনলাম। তিনি যেমন,
তার নামসমূহ ও তাঁর গুণাবলী
সহকারে এবং আমি গ্রহণ
করেছি তার সমস্ত বিধান
ও আরকানকে।
মানুষের আমল বিশুদ্ধ হবার
পূর্বশর্ত হল বিশুদ্ধ ঈমান। সুরা
নাহাল ৯৭, বানি ইসরাইল
১৯।
ঈমান বিশুদ্ধ না হলে আমল
যতই বিশুদ্ধ হোক তা কবুল
হবে না। যেমন
ছলাত (নামায) বিশুদ্ধ হওয়ার
পূর্বশর্ত উযু। উযু
যদি বিশুদ্ধ না হয় আর
ছলাত (নামায) যদি বিশুদ্ধ
হয় তাহলে ছলাত (নামায)
হয় না। ঈমানের
মধ্যে সর্ব প্রথম হল
আল্লাহর উপর ঈমান।
সেই আল্লাহর উপর ঈমান যদি
বিশুদ্ধ না হয় তাহলে
অন্যান্য আমল যতই বিশুদ্ধ
হোক, যেমন সলাত (নামায),
ছিয়াম (রোযা), হজ্ব, যাকাত
কোনটাই কবুল হবেনা।
ঈমান এবং চিন্তা-ভাবনা,
দুটি বিষয় বুঝে নিতে
হবে। ঈমান হল
অন্তরের
বিশ্বাস।
বিশ্বাস
করার জন্য চাই জ্ঞান। এই
জ্ঞানকে বলা হয় ইলম। যার
উপর বিশ্বাস করব সে সম্পর্কে
জ্ঞান (ইলম) না থাকলে
বিশ্বাস করব কিসের ভিত্তিতে?
ফেরেশতা আমরা চোখে দেখিনি। তাই
ঈমান আনতে হলে ফেরেশতা
সম্পর্কে জানতে হবে।
জানতে হলেই কুরআন ও
সহীহ হাদীস দ্বারা তাদের
পরিচয় অবগত হতে হবে। ফেরেশতাদের
সম্পর্কে অবগত না হয়ে
ঈমান আনা সম্ভব নয়।
ইমাম বোখারী (রহঃ) তাঁর সহীহ
বোখারীর ১ম খন্ডে কিতাবুল
ইলমে বলেন- কোন কথা
বলার ও কোন কাজ
করার পূর্বে সে বিষয়ে
ইলম হাসিল করতে হবে। সহীহ
আল-বোখারী ১ম খন্ড
পৃঃ ৭১ আধুনিক প্রকাশনী। বোখারী
শরিফ ইসলামী উন্ডেশন, ১ম
খন্ড ৮১ পৃঃ ইমাম
বোখারী দলিল দেনঃ- জানো সেই আল্লাহ্
কে
যিনি
ব্যতীত
কোন
ইলাহ্
নাই;
সুরা মুহাম্মাদ ১৯। এই
আয়াতে আল্লাহ্ মানুষকে প্রথমে জানবার হুকুম
করেছেন।
আয়াত দ্বারা আল্লাহ্ বুঝিয়ে
দিলেন যে, আল্লাহ্-কে
মান্য
করার
পূর্বে
আল্লাহ্-কে
জানতে
হবে।
এ ব্যাপারে আল্লাহ্ তাঁর কুরআন ও
হাদীসের মধ্যে নিজের পরিচয়
সম্পর্কে যা বলেছেন তা
জেনে নিতে হবে।
আল্লাহ্ তাঁর অবতীর্ণ আয়াত
নিয়ে চিন্তা-ভাবনা করার
নির্দেশ প্রদান করেছেন।যেমন- সুরা নাহাল-৬৯, সুরা রুম-২১, সুরা যুমার-৪২, জাসিয়া-১৩,
হাসর-২১, এ ছাড়াও
বহু আয়াতে চিন্তা ভাবনার
কথা বলেছেন। জানবার
কথা বলেছেন, যেমন-সুরা বাক্কারা-১১৮, সুরা ইউনুস-৫, আন-নামাল-৫২, আরও অনেক
আয়াতে আল্লাহ্ তাঁর আয়াত সম্পর্কে
জ্ঞান অর্জনের হুকুম করেছেন।
আল্লাহ্
সম্পর্কে
জ্ঞান
অর্জনের
হুকুমঃ
আল্লাহ্ যে সকল আয়াতে
এবং রাসুলুল্লাহ (সঃ) যে সকল
হাদীসে আল্লাহ্-র বিভিন্ন অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ সম্পর্কে উল্লেখ করেছেন সে
সম্পর্কে জ্ঞাত হতে হবে। আর
তার শিক্ষা গ্রহন করতে
হবে। কারণ
জ্ঞান না হলে ঈমান
আনা সম্ভব নয়।
আল্লাহ্-র
অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ
সম্পর্কে
উল্লেখিত
আয়াত
ও
হাদীসের
চর্চা
করা
ফরয।
কারন তার চর্চা না
হলে ইলম হাসিল হবেনা। আর
ইলম (জ্ঞান) হাসিল না
হলে আল্লাহ্-র উপর ঈমান
আনা হবে না।
আল্লাহ্ নিজেই হুকুম করেছেন
যে, তাঁর (আল্লাহ্)
সম্পর্কে
যিনি
জানেন
তাকে
জিজ্ঞাসা
করে
দেখ;
সুরা ফুরক্কান-৫৯।
জানো
সেই
আল্লাহ্-কে
যিনি
ব্যতীত
কোন
ইলাহ
নাই;
সুরা মুহাম্মদ-১৯।
তিনি
আকাশ
মন্ডলী
পৃথিবী
ও
উহাদিগের
মধ্যবর্তী
সমস্ত
কিছু
ছয়
দিবসে
সৃষ্টি
করেন,
অতঃপর
তিনি
আরশে
সমাশীন
হন।
তিনিই
রাহমান,
তাহার
সম্বন্ধে
যে
অবগত
আছে
তাহাকে
জিজ্ঞাসা
করিয়া
দেখ;
সুরা ফুরকান-৫৯
মূর্থদের
ঘৃণা
করেন
আল্লাহ্
আল্লাহ্-র নিকট নিকৃষ্টতম
জীব সেই বধির ও
মূক যাহারা কিছুই বোঝে
না; সুরা আনফাল-৫২। তাহাদিগের
চক্ষু আছে তদ্দারা দেখে
না এবং তাহাদিগের কর্ণ
আছে তাহারা তদ্দারা শ্রবন
করে না, ইহারা পশুর
ন্যায় বরং উহা অপেক্ষাও
অধিক বিভ্রান্ত; সুরা আ'রাফ-১৭৯।
যাদের অন্তরে দ্বীনি (আল্লাহ্
ও রাসুল (সঃ)-এর)
উপদেশ স্থান পায়না, তাদেরকে
ইসলামী রীতি নীতির কথা
বলা হলে তাদের অন্তরে
সেই কথা বদ্ধমুল হয়
না ববং একদিক দিয়ে
ঢুকে অপর দিক দিয়ে
বেরিয়ে যায়, তাদের অন্তর
যেন একটি নাফাক বা
সুড়ঙ্গ পথ, এরা মুখে
ইসলামের কথা বললেও অন্তরে
কুফরীকে লালন করে।
"মানুষের মাঝে এমন কিছু
লোক আছে যারা বলে,
আমরা আল্লাহ্ ও আখেরাতের প্রতি
ঈমান এনেছি। মূলতঃ
তারা ঈমানদার নয়"; সুরা বাক্কারা-৮
"মানুষের মাঝে এমন কিছু
লোক আছে, যাদের পার্থিব
জীবনের কথা-বার্তা আপনাকে
চমৎকৃত করবে, আর তার
অন্তরের কথার ব্যাপারে আল্লাহ
তা'আলাকে সাক্ষী করে,
সে মূলত বড় ঝগড়াটে
লোক"; সুরা বাক্কারা-২০৪
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন